• সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪২৯

শিক্ষা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫ শতাধিক শিশুর গ্রামে নেই স্কুল!

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ২১ মে ২০২৩

আশিকুর রহমান মিঠু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া:
আমাদের গ্রামে স্কুল নেই, রাস্তাঘাট নেই। মানুষের চেহারা নিয়ে কেবল বেঁচে আছি। শিক্ষার কারণে আমাদের মধ্যে প্রকৃত মনুষ্যত্ব জাগ্রত হচ্ছে না। জেলার মধ্যে আমাদের গ্রামে সবচেয়ে বেশি নিরক্ষর লোকের বসবাস। এই গ্রামে কোন শিক্ষিত মানুষ থাকে না। যাদের অবস্থান একটু ভাল তারা চলে যায় শহরে। যারা বসবাস করনে তারা সবাই নিরক্ষর। ঝগড়া বিবাধ নিয়ে কাটে তাদের সময়। এ ভাবেই নিজের আক্ষেপের কথাগুলো বলছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র বোরহান উদ্দিন খান।
জানা গেছে, বিদ্যালয়বিহীন গ্রামটির নাম বেঙ্গাউতা। এটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার চাপরতলা ইউনিয়নে অবস্থিত। গ্রামে প্রায় এক হাজার পরিবারের পাঁচ হাজার মানুষের বসবাস। প্রায় পাঁচ শতাধিক শিশু রয়েছে এই গ্রামে। গ্রামটির তিন কিলোমিটার দূরে রয়েছে কালিউতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নাসিরনগর উপজেলায় ১৩২টি গ্রাম রয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১২৪টি। ১৭টি গ্রামে বিদ্যালয় নেই। এর মধ্যে উপজেলার সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরের একটি গ্রাম বেঙ্গাউতা। ওই গ্রামে নেই কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়। পাশের গ্রাম কালিউতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেতে হয় তিন কিলোমিটার পথ পারি দিয়ে।
বেঙ্গাউতা গ্রামের মো. আমির বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছর কেটে গেলেও আমাদের গ্রামে কোন স্কুল তৈরি হয়নি। গ্রামে নেই কোন রাস্তা-ঘাট। পাশের গ্রামে যেতে হয় ফসলি জমির উপর দিয়ে। কিন্তু বর্ষায় তাও ডুবে যায়। তাই ছয় মাস আমরা কোথাও যেতে পারি না। নৌকার পথ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় শিশুরা পাশের গ্রামের স্কুলে যেতে চায় না। ফলে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে শিশু শিক্ষার্থীসহ হাজারো বাসিন্দা।
চাপরতলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মনসুর বলেন, বেঙ্গাউতা গ্রামটি আসলেই যোগাযোগসহ সকল সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত। গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রাস্তা-ঘাট প্রয়োজন।
কালিউতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, বেঙ্গাউতা গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক শিশু রয়েছে। কিন্তু রাস্তাঘাট না থাকায় ও নদী পার হয়ে আসতে হয় বিধায় বছরের তিন-চার মাস শিশুরা স্কুলে আসত। সম্প্রতি উদ্বেগজনক ভাবে কমে গেছে ওই গ্রামের শিশুদের আসা। শুনেছি তারা স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছে।
নাসিরনগর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইকবাল মিয়া বলেন, নাসিরনগর উপজেলায় এমন আরো ১৭টি গ্রাম আছে। সেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। বেঙ্গাউতা গ্রামে কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। বিদ্যালয় করতে ৩৩ শতক জায়াগার প্রয়োজন। জায়গা পেলে আমরা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জেনেছি। ওই গ্রামে বিদ্যালয় নির্মাণ করতে খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads